পাঠ ২ - অপবিত্রতা

 

অপবিত্রতার আরবি প্রতিশব্দ নাজাসাতুন। এটি হলাে তাহারাতুন (পবিত্রতা) -এর বিপরীত। কতিপয় বস্তুর কারণে বা প্রভাবে পবিত্র জিনিস অপবিত্র হয়ে যায়, একে নাজাসাত বলে। যেমন : প্রস্রাব, পায়খানা ইত্যাদির কারণে শরীর, কাপড় ও ব্যবহারিক জিনিসপত্র অপবিত্র হয়ে যায়। এ অবস্থায় তা পবিত্র করা একান্ত জরুরি। অপবিত্র অবস্থা থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ঘােষণা করেন— “এবং আপনার পােশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র করুন।”
(সূরা আল-মুদ্দাছির, আয়াত : ৪)। 

নাজাসাতের প্রকারভেদ নাজাসাত বা অপবিত্রতা দুই প্রকার : 

১. নাজাসাতে হাকিকি বা প্রকৃত অপবিত্রতা, 

২. নাজাসাতে হুকমি বা অপ্রকৃত অপবিত্রতা। 


নাজাসাতে হাকিকি - নাজাসাতে হাকিকি হচ্ছে ঐ সকল অপবিত্র বস্তু যা থেকে মানুষ নিজে দূরে থাকতে চায় এবং নিজের শরীর, পােশাক-পরিচ্ছদ ও অন্যান্য ব্যবহারের জিনিসপত্র বাঁচিয়ে রাখতে চায়; যেমন : প্রস্রাব, পায়খানা, রক্ত, মদ ইত্যাদি। ইসলাম এসব থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। 


নাজাসাতে হুকমি - নাজাসাতে হুকমি হচ্ছে ঐ সকল অপবিত্রতা যা দেখা যায় না কিন্তু ইসলামি বিধানে তা নাজাসাত বা অপবিত্র বলে গণ্য; যেমন : ওযু ভঙ্গ হওয়া, গােসলের প্রয়ােজন হওয়া ইত্যাদি। উল্লেখ্য যে, উভয় প্রকার অপবিত্রতা থেকে শরীর পবিত্র রাখা একান্ত প্রয়ােজন। 

অপবিত্রতার ব্যাপারে সতর্ক না থাকলে কবরে শাস্তি ভােগ করতে হবে। মহানবি (স.) একদিন দুটি কবরের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেন, এ কবর দুটিতে যাদের দাফন করা হয়েছে, তাদের উপর শাস্তি হচ্ছে। তাদের একজনের গুনাহ তাে এই যে, সে প্রস্রাবের অপবিত্রতা হতে পবিত্র থাকার চেষ্টা করত না। আর অপরজন চোগলখােরি (দুর্নাম) করে বেড়াতাে। তারপর মহানবি (স.) খেজুরের একটি কাঁচা ডাল ভেঙে দুই টুকরা করে দুই কবরে পুঁতে দিলেন। সাহাবিগণ (রা.) নিবেদন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কী উদ্দেশ্যে আপনি এ কাজ করলেন? তিনি উত্তরে বললেন, ‘আশা করা যায় ডালের এ টুকরা শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত উভয়ের কবর আযাব (শাস্তি) কম করে দেওয়া হবে।' (বুখারি ও মুসলিম) 

কাজ : শিক্ষার্থীরা চার-পাঁচজনের দলে বিভক্ত হয়ে প্রত্যেক দল প্রকৃত অপবিত্রতার ও অপ্রকৃত অপবিত্রতার একটি তালিকা ছক আকারে লিখে শ্রেণিতে উপস্থাপন করবে। 


Post a Comment

0 Comments