ইবাদত আরবি শব্দ। এর অর্থ দাসত্ব বা আনুগত্য। আল্লাহর দাসত্ব ও আনুগত্যই হলাে ইবাদত। ইসলামি পরিভাষায় আল্লাহর সকল আদেশ-নিষেধ মেনে চলার নামই ইবাদত। মহান আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তিনিই আমাদের লালনপালন করেন। তিনিই আমাদের রব। আমরা তাঁর বান্দা। আমাদের জীবন, মরণ তাঁর হাতে। তিনি আমাদের জন্য এ মহাবিশ্বকে কতাে সুন্দর করে সাজিয়েছেন । আসমান - জমিন, চাঁদ-সুরুজ, ফুল-ফল, নদী-নালা সব আমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আমরা সব ভােগ করি। আমাদের সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে তৈরি করেছেন। আল্লাহর দেওয়া অফুরন্ত নিয়ামত ভােগ করার পর এর শুকরিয়া (কৃতজ্ঞতা) আদায় করতে হবে। নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে
আল্লাহর দেওয়া বিধানমতাে চলার নামই ইবাদত। আমরা আল্লাহর আদেশমতাে চলব এবং তাঁরই ইবাদত করব। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন “এবং তুমি তােমার ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় তােমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘােষণা কর।” (সূরা আল-মুমিন, আয়াত : ৫৫) মহান আল্লাহ সকল জিনিস মানুষের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আর জিন ও মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত বা দাসত্ব স্বীকার করার জন্য। এ সম্পর্কে কুরআন মজিদে আল্লাহ তায়ালা ঘােষণা করেন—
অর্থ : “আর আমি জিন ও মানুষকে শুধু আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।” (সূরা আ-যারিয়াত, আয়াত : ৫৬)। মহানবি (স.) ইবাদত সম্পর্কে বলেছেন, যেখানেই থাকো আল্লাহকে ভয় করে চল। আর কখনাে কোনাে মন্দ কাজ হয়ে গেলে তখনি একটি ভালাে কাজ করে ফেল। তাহলে এ কাজটি পূর্ববর্তী মন্দ কাজকে মিটিয়ে দেবে। আর মানুষের সাথে উত্তম আচরণ কর।' (তিরমিযি) যেখানে আল্লাহ তায়ালা তার বড় বড় দানের কথা উল্লেখ করেছেন, সেখানেই তিনি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে ‘আবদুন’ বলে সম্বােধন করেছেন। যেমন : কুরআন মজিদ অবতীর্ণের সময় আল্লাহ তায়ালা বলেন-
অর্থ : “সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তাঁর বান্দার (রাসুলের) উপর কিতাব (কুরআন) অবতীর্ণ করেছেন এবং তাতে কোনাে বক্রতা রাখেন নাই।” (সূরা আল-কাহফ, আয়াত :১) আমরা ভালাে কাজ করব। অন্যকে সকাজের পরামর্শ দেবাে। এতে উভয়ই সমান সাওয়াব পাব। এ প্রসঙ্গে মহানবি (স.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনাে ভালাে কাজের পরামর্শ বা সন্ধান দেবে, সে ঐ কাজটি সম্পাদনকারীর সমান সাওয়াব পাবে।' (মুসলিম)। আমাদের জন্য নামায, রােযা, হজ, যাকাত ইত্যাদি কতােগুলাে নির্ধারিত
ইবাদত রয়েছে। এগুলাে নবি করিম (স.) যেভাবে আদায় করেছেন, আমাদেরকে করতে বলেছেন, আমরা ও ঠিক সেভাবেই আদায় করব। এভাবে মানুষ তার জীবনকে পরিচালিত করলে সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা, আনুগত্য ও অপরের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি বৃদ্ধি পাবে।
কাজ : শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে পাঠ্যপুস্তকের আলােচনার বাইরে আর কোন কোন কাজ | ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে তার তালিকা তৈরি করবে।
0 Comments