রৌদ্র লেখে জয় -শামসুর রাহমান



বর্গি এলাে খাজনা নিতে,
মারল মানুষ কত।
পুড়ল শহর, পুড়ল শ্যামল
গ্রাম যে শত শত।

হানাদারের সঙ্গে জোরে
লড়ে মুক্তিসেনা,
তাদের কথা দেশের মানুষ
কখনাে ভুলবে না।

আবার দেখি নীল আকাশে
পায়রা মেলে পাখা;
মা হয়ে যায় দেশের মাটি,
তার বুকেতেই থাকা।

কাল যেখানে আঁধার ছিল
আজ সেখানে আলাে।
কাল যেখানে মন্দ ছিল,
আজ সেখানে ভালাে।

কাল যেখানে পরাজয়ের
কালাে সন্ধ্যা হয়,
আজ সেখানে নতুন করে
রৌদ্র লেখে জয়।

কবিতার মূলভাব জেনে নিই। 
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতি জয়লাভ করে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ' নামে এক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। আগে এ দেশের নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান। হানাদার পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে যুদ্ধ করে  এদেশের বীর মুক্তিযোেদ্ধারা জয়ী হয়েছিলেন। এই কবিতায় পাকিস্তানিদের অত্যাচারের কথা বলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কেন এদেশের সন্তানেরা সংগ্রাম করেছিল সে কথাও বলা হয়েছে। 

প্রশ্নগুলাের উত্তর মুখে মুখে বলি ও লিখি। 
ক. বর্গি কারা? তারা কী করেছিল? 
খ. হানাদারদের কথা মানুষ কেন ভুলবে না? 
গ. মুক্তিযােদ্ধাদের কথা মানুষ কখনাে ভুলবে না কেন? 
ঘ, মুক্তিসেনারা কাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল এবং কেন? 
ঙ. ‘কাল যেখানে আঁধার ছিল আজ সেখানে আলাে।'- কথাটি ব্যাখ্যা করি। 

কবি-পরিচিতি কবি শামসুর রাহমান ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে অক্টোবরে পুরানাে ঢাকার মাহুতটুলিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃিক নিবাস নরসিংদী জেলার পাড়াতলী গ্রামে। তিনি দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা পেশায় নিয়ােজিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের একজন প্রধান কবি। ছােটদের জন্য তিনি অনেক ছড়া, কবিতা ও স্মৃতিকথা লিখেছেন। ‘এলাটিং বেলাটিং’, ‘ধান ভানলে কুঁড়াে দেবাে’, ‘স্মৃতির শহর ঢাকা ইত্যাদি ছােটদের জন্য লেখা তাঁর বিখ্যাত বই। তিনি ২০০৬ সালের ১৭ই আগস্ট ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

Post a Comment

0 Comments