ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার জন্য শিক্ষার্থীর অন্তর্নিহিত মেধা ও সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশে সাহায্য করার মাধ্যমে উচ্চতর শিক্ষায় যােগ্য করে তােলা মাধ্যমিক শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য। শিক্ষার্থীকে দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত পটভূমির পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষ ও যােগ্য নাগরিক করে তােলাও মাধ্যমিক শিক্ষার অন্যতম বিবেচ্য বিষয়।
জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের আলােকে প্রণীত হয়েছে মাধ্যমিক স্তরের সকল পাঠ্যপুস্তক । পাঠ্যপুস্তকগুলাের বিষয় নির্বাচন ও উপস্থাপনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর নৈতিক ও মানবিক মূল্যবােধ থেকে শুরু করে ইতিহাস ও ঐতিহ্যচেতনা, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিবােধ, দেশপ্রেমবােধ, প্রকৃতি-চেতনা এবং ধর্ম-বর্ণ-গােত্র ও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার প্রতি সমমর্যাদাবােধ জাগ্রত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
রূপকল্প ২০২১ বর্তমান সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকারকে সামনে রেখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে নিরক্ষরতামুক্ত করার প্রত্যয় ঘােষণা করে ২০০৯ সালে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। তাঁরই নির্দেশনা মােতাবেক ২০১০ সাল থেকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বাের্ড বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শুরু করেছে।
ইসলাম মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল ক্ষেত্রে গুরুত্ব প্রদান করে। তাই ধর্ম শিক্ষাকে বাস্তব জীবনসংশ্লিষ্ট নৈতিক ও মানবিক মূল্যবােধের বিকাশ, অধিকতর ব্যবহার উপযােগী এবং নিজ ধর্ম সম্পর্কে পরিচিতি প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির উন্নয়ন ঘটিয়ে ইতিবাচক আচরণিক পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে ‘ইসলাম শিক্ষা বিষয়টিকে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা নামে অভিহিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে পরিবার, সমাজ, জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রতি সহানুভূতিশীল, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত, সৎ, ন্যায়নিষ্ঠ, সহনশীল, উদার, শ্রমের মর্যাদাবােধ ও গণতান্ত্রিক মূল্যবােধসম্পন্ন এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয় সেইসব দিক বিবেচনায় রেখে পাঠ্যপুস্তকটি প্রণয়ন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এই পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবােধ অর্জন এবং ক্ষতিকর ও অসদাচরণমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত না হয়ে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার সুযােগ পাবে।
বানানের ক্ষেত্রে অনুসৃত হয়েছে বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রণীত বানানরীতি। পাঠ্যপুস্তকটি রচনা, সম্পাদনা, চিত্রাঙ্কন, নমুনা প্রশ্নাদি প্রণয়ন ও প্রকাশনার কাজে যারা আন্তরিকভাবে মেধা ও শ্রম দিয়েছেন তাঁদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহা।
চেয়ারম্যান।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বাের্ড, বাংলাদেশ
0 Comments