দেখে এলাম নায়াগ্রা


তােমরা নিশ্চয়ই জলপ্রপাতের কথা শুনেছ? জলপ্রপাত দেখার সৌভাগ্য একবার আমার হয়েছিল। নিজের দেশে নয়, বিদেশের মাটিতে। কানাডায় গিয়েছি। সেখানকার খুব বড় শহর টরন্টোতে। একদিন বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে গল্পের মজলিসে কথা উঠল-সবাই মিলে নায়াগ্রা দেখতে গেলে কেমন হয়। তখনি সকলে রাজি। কোনদিন যাওয়া হবে তাও ঠিক হলাে। কোথাও যাব বললেই তাে হয় না, কীভাবে যাব তা ভাবতে হয়। বাসে করে যাওয়া যায়। কিন্তু বাসে চেপে গেলে নিজের ইচ্ছেমতাে যেখানে সেখানে থামা যায় না। অতএব ঠিক হলাে যে, কোনাে বন্ধুর একটা গাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে। তাই যাওয়া গেল একদিন। আমেরিকায় কিংবা কানাডায় প্রায় সকলেরই নিজের গাড়ি থাকে। আমার বন্ধুরও ছিল। বন্ধুরই এক বিশাল গাড়িতে একদিন চড়ে বসলাম। চলাে নায়াগ্রা, চলাে নায়াগ্রা। আহ, দেশে ফিরে গিয়ে কী গল্পটাই না করা যাবে।

শাঁ শাঁ করে গাড়ি ছুটতে লাগল। এখানে রাস্তা মােটেই আঁকাবাঁকা থাকে না, রেললাইনের মতাে সােজা। ফলে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানাে সম্ভব হয়। কিন্তু এত জায়গা থাকতে নায়াগ্রা দেখতেই যেতে হবে কেন? নায়াগ্রা হলাে জলপ্রপাত। জলপ্রপাত তাে কখনাে দেখি নি। শুধু জেনে এসেছি, ঝর্ণার মতাে পাহাড়ের ওপর থেকে পানি নিচে সমতল ভূমিতে গড়িয়ে পড়ে। তবে আকারে অনেক বিশাল। ঝর্ণা ছােট, আর জলপ্রপাত বড়- এটুকু যা তফাত। উপর থেকে নিচে জল পতনের ব্যাপার দুই জায়গাতেই ঘটছে। জল যদি না-ই পড়ে, তা হলে ঝর্ণাও হবে না, জলপ্রপাতও হবে না। কিন্তু জল যে নিচে পড়ছে, পড়ে যাচ্ছেটা কোথায়? জলের ধর্ম তাে গড়িয়ে যাওয়া। ঝর্ণার জলও গড়াতে গড়াতে ক্রমশ নদী হয়ে যায়। এখন অন্য কথায় আসি। জলপ্রপাত দেখতে যাব, কিন্তু পাহাড় দেখব না- একি কখনাে সম্ভব? সম্ভব নয়। কারণ পাহাড় বেয়ে জলের নিচে নামাটা না দেখে উপায় তাে নেই। 

কিন্তু বিশ্ব-ভূমণ্ডল বড়ই বিচিত্র! কত অসম্ভব ব্যাপারই যে ঘটে। পৃথিবীতে সবচেয়ে বৃহৎ জলপ্রপাত বলা হয় নায়াগ্রাকে। এই জলপ্রপাত পাহাড় থেকে নামে নি। সমতলের ওপর দিয়ে একটি খরস্রোতা নদী বইছে। সামনের সবকিছু তাে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কই? কিছুই তাে ভাসছে না! তার কারণ, যে মাটির ওপর দিয়ে এই খরস্রোতা নদীটি প্রবাহিত হচ্ছে সেখানে হঠাৎ করেই এক বিশাল ফাটল। দুই দিকের মাটির মধ্যে এক বিরাট ফঁাক। একটা নদী যতখানি চওড়া হতে পারে ততখানি ফঁাক। নায়াগ্রার জল ঐ ফঁাকের ভিতরে চলে যাচ্ছে। এটাও তাে প্রপাত, কারণ পানি পড়ছে। তবে, সাধারণ জলপ্রপাতের মতাে পাহাড় থেকে নিচে পড়ছে না। পড়ছে, সমতল থেকে বিশাল ফাটলের গহ্বরে। কিন্তু পানিটা ফাটলের মধ্যে পড়ে যাচ্ছে কোথায়? নায়াগ্রা তাই একেবারে ভিন্ন রকমের জলপ্রপাত।


প্রশ্নগুলাের উত্তর লিখি ও বলি। 
ক. নায়াগ্রা কোথায় অবস্থিত? 
খ. নায়াগ্রা জলপ্রপাত এবং ঝর্ণার মধ্যে পার্থক্য বুঝিয়ে লেখ? 
গ. নায়াগ্রা জলপ্রপাতের বিশেষত্ব কী? ঘ. নায়াগ্রার জল কোথায় যায়? 
ঙ. ‘বিশ্ব-ভূমণ্ডল বড়ই বিচিত্র’- ব্যাখ্যা কর। 
চ. সাধারণ জলপ্রপাতের সঙ্গে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের তুলনামূলক আলােচনা কর।

নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ি এবং প্রশ্নগুলাের উত্তর লিখি। 
বিশ্ব-ভূমণ্ডল বড়ই বিচিত্র। কত অসম্ভব ব্যাপারই যে ঘটে! পৃথিবীতে সবচেয়ে বৃহৎ জলপ্রপাত বলা হয় নায়াগ্রাকে। এই জলপ্রপাত পাহাড় থেকে নামে নি। সমতলের ওপর দিয়ে একটি খরস্রোতা নদী বইছে। যে মাটির ওপর দিয়ে এই খরস্রোতা নদীটি প্রবাহিত হচ্ছে সেখানে হঠাৎ করেই এক বিশাল ফাটল। একটা নদী যতখানি চওড়া হতে পারে ততখানি ফঁাক। নায়াগ্রার জল ঐ ফাঁকের ভিতরে চলে যাচ্ছে। এটাও তাে প্রপাত, কারণ পানি পড়ছে। তবে, সাধারণ জলপ্রপাতের মতাে পাহাড় থেকে নিচে পড়ছে না। পড়ছে, সমতল থেকে বিশাল ফাটলের গহ্বরে। নায়াগ্রা তাই একেবারে ভিন্ন রকমের জলপ্রপাত। 
ক. পৃথিবীর বৃহৎ জলপ্রপাত বলা হয় কোনটিকে? 
খ. নায়াগ্রা জলপ্রপাতের বৈশিষ্ট্য কী? 
গ. নায়াগ্রা জলপ্রপাত কোথা থেকে প্রবাহিত হয়? 
ঘ. নায়াগ্রাকে ভিন্ন রকমের জলপ্রপাত বলা হয়েছে কেন?



Post a Comment

0 Comments