বড় বােন ব্যবসায়ীর স্ত্রী, থাকে শহরে। ছােট বােন কৃষকের স্ত্রী, থাকে গ্রামে। বড় বােন এসেছে ছােট বােনের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে। চা খেতে খেতে দুই বােন গল্প করছিল। বড় বােন বলছিল শহরে থাকার সুযােগ সুবিধার কথা। বেশ বাড়িয়ে বলা। যাকে বলে গল্প দেওয়া। ছােট বােনও গ্রামে থাকার ভালাে দিকগুলাের কথা বলে।
ছােট বােনের স্বামী পাখােম সব শুনছিল। সে বলল, “কথা ঠিক। ছছাটবেলা থেকেই মাটির কোলে পড়ে আছি। তাই বলে তেমন কোনাে অভাব নেই। অভাব কেবল একটিই, আমার জমি খুব কম। জমি যদি পাই তা হলে কাউকে পরােয়া করব না, স্বয়ং শয়তানকেও না।' শয়তান শুনে বেশ খুশি হলাে। ভাবল, একে নিয়ে মজার একটা খেলা খেলবে। আগে অনেক জমি দেবে, তারপর কেড়ে নেবে।
পাখােমর জমি ক্রয় - পাখখামের বাড়ির কাছে একজন মহিলা বাস করতেন। তিনি ছিলেন ২৪০ একর জমির মালিক। ভালাে মানুষ তিনি। প্রতিবেশীদের সঙ্গে তার সম্পর্কও ভালাে। অবসরপ্রাপ্ত একজন সৈনিককে জমিদারির ওভারশিয়ার নিযুক্ত করলেন তিনি। ওভারশিয়ার লােকটি ভালাে নয়। নানা ছলছুতায় কৃষকদের জরিমানা করে সে। কারও গরু, ঘােড়া, বাছুর জমিজিরাতে ঢুকলেই সে জরিমানা করে, অত্যাচার করে। এরই মধ্যে শােনা গেল জমিদার মহিলা তার সব জমি বিক্রি করে দেবেন। আর ওভারশিয়ার কিনে নেবে তার সম্পত্তি। কৃষকরা খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে। শেষে সবাই মিলে বেশি দামে জমি কেনার প্রস্তাব দেয় মহিলাকে। মহিলা রাজি হলেন। কিন্তু শয়তানের ইন্ধনে তারা একত্র হতে পারছিল না। তাই যার যার মতাে জমি কেনার সিদ্ধান্ত হয়।
পাখখামের ১০০ রুবল আগেই ছিল। তারপর একটি গাধার বাচ্চা ও অর্ধেক মৌমাছি বিক্রি করল সে। ছেলেকেও পাঠিয়ে দিল চাকরিতে। এভাবে বাকি অর্ধেক টাকা জোগাড় হলাে। সব টাকা জুটিয়ে সে তিরিশ একর জমি ও ছােট একটি বাগান ক্রয় করল। বেশ, পাখােম হয়ে গেল জমির মালিক। তারপর নতুন জমিতে বীজ বুনল, | এক বছরের মধ্যেই সে মহিলার সমমত টাকা শোধ করে দিল। এখন সে জমির পরাে মালিক। ঘােড়ায় চড়ে সে জমিজমা দেখতে গিয়ে আনন্দে অভিভূত হয়। গভীর যত্ন আর মায়া দিয়ে সে ফসল ফলাত। তার জমির ঘাসগুলাে, ফুলগুলাে সবই যেন আলাদা। মন তার আনন্দে ভরে উঠে।
পাখখামের বাড়িতে অতিথি চাষি - একজন চাষি পাখােমের বাড়ি আসে। পাখােম তাকে থাকতে দেয়, খেতে দেয়। সে জানায়, ভলগার ওপার থেকে সে এসেছে। সে আরও বলে, সেখানে নতুন একটি পত্তনি হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতে নাম লেখালেই ১০০ ও সাড়ে তিন হাত জমি একর জমি পাওয়া যায়। আর সে কী জমি। সােনার টুকরাে। লােকটি আরও বলে, একজন গরি চাষি ছিল। কাজ করার দুখানা হাত ছাড়া কিছুই তার ছিল না। এবার সে ১০০ একর জমিতে শুধু গমই ফলিয়েছে। গত বছর শুধু গম বেচে সে আয় করেছে ৫০০০ রুবল। শুনে পাখােম উত্তেজিত হয়ে উঠল।
তার বর্তমান সহায়-সম্পত্তি নিয়ে সে আর সন্তুষ্ট থাকতে পারল না। সুতরাং গরম পড়তেই সে বেরিয়ে পড়ল। ভলগা নদীতে স্টিমারে চড়ে পৌছল সামারা। সেখান থেকে প্রায় ২৭৪ মাইল পায়ে হেঁটে পৌছল গন্তব্যে। গিয়ে দেখল, যা সে শুনেছে সবই ঠিক। অতি অল্প দামে উর্বর জমি কেনা যায়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, প্রতি একরের দাম মাত্র ১.৫০ রুবল। পাখােম বাড়িতে ফিরে জমিজিরাত বিক্রি করে দেয়। বসন্তের শুরুতে সে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে সেই নতুন দেশে পাড়ি জমায়।
নতুন দেশে পাখােম - নতুন দেশে এসে পাােেম এ সমাজের সদস্য হয়। আর সদস্য হওয়াতেই সে লাভ করে ১০০ একর জমি। গাে-চারণ ভূমি তাে আছেই। এখানে জীবনযাপন আগের চেয়ে দশগুণ ভালাে। পাথােম নতুন নতুন জমি কেনে। ফসল বােনে। লাভ হয় প্রচুর। একবার তাে ১০০০ একর জমি মাত্র ১৫০০ রুবলে কিনে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল। কিন্তু এ সময় একজন মহাজন বাড়িতে এসে উঠে। সে জানায় অনেক অনেক দূরের বাসকিরদের দেশ থেকে সে এসেছে। সেখানে জমির দাম খুবই সস্তা। ১০০০ রুবল দিয়ে সে ১০,০০০ একর জমি কিনেছে। পাখােমকে জমির দলিলটিও দেখাল। লােকটি আরও জানায় যে, মানুষগুলাে একেবারে ভেড়ার মতাে সরল। আপনি অনায়াসে যে কোনাে জিনিস তাদের কাছ থেকে বাগিয়ে নিতে পারেন। সুতরাং পাখােম কেন ১৫০০ রুবল দিয়ে ১০০০ একর জমি কিনবে? ঐ রুবল দিয়ে সে তাে একজন জমিদারই বনে যেতে পারে।
বাসকিরদের দেশে পাখােম - একজন মজুর সঙ্গে নিয়ে বাসকিরদের দেশে যাওয়ার জন্য যাত্রা করল পাথােম। সঙ্গে নিল কিছু উপহার। প্রায় ৩৩২ মাইল পথ হেঁটে গেল তারা। তারপর সাত দিনের দিন সিকিরদের তাঁবুতে গিয়ে হাজির হলাে। মহাজন যেমন বলেছিল সব ঠিক সেরকমই। খােলা প্রান্তরের নদীটির তীরে এরা বাস করে। ঘরবাড়ি নেই। আছে চামড়ার ছাউনি দেওয়া গাড়ি। এর মধ্যেই তাদের বসবাস। এরা জমি চাষ করে না, ফসল ফলায় না। জমিতে চরে বেড়ায় ঘােড়া, গরু, মহিষ। ঘােড়ার দুধ এদের প্রিয় খাদ্য। ভেড়ার মাংসও খায়। দুধ থেকে তৈরি কুসিম তাদের পানীয়। এরা সহজ-সরল, দয়ালু ও হাসিখুশি। পাখােমকে দেখেই তারা গাড়ি থেকে নেমে অভ্যর্থনা জানাল, আদর-আপ্যায়ন করল। পাখােমও তাদের উপহার দিল। বিনিময়ে তারা জানতে চাইল যে পাখােম কী চায়? তারা জানল, পাখােম জমি কিনতে চায়। শুনে তারা অতিথির প্রতি খুবই সন্তুষ্ট হলাে। তারা বলল, “আপনি যত জমি চান তত জমি আমরা বিক্রয় করতে রাজি।' এ সময় তাদের নেতা স্টার্শিনা এসে
লেন। তিনিও জানালেন, পালােম যত খুশি জমি ক্রয় করতে পারে। জমির দাম দিনপ্রতি ১০০ রুবল। “দিনপ্রতি ব্যাপারটা পাখােম বুঝে উঠতে পারল না। নেতা জানালেন,সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যতটা জমি ঘুরে আসতে পারবে ততটুকু জমির মূল্য ।
পাখােমের স্বপ্ন - পাখােম শুয়েছিল পাখির পালকের বিছানায়। খুব আরামদায়ক। কিন্তু তবু তার ঘুম হয়নি। অনেক জমির মালিক হতে যাচ্ছে সে। ২০,০০০ একর তাে বটেই। চিন্তায় উত্তেজনায় সারা রাত সে ঘুমােত পারল না। কিন্তু ভােরের দিকে সে ঘুমিয়ে পড়ল। একটা স্বপ্নও দেখল। বাইরে যেন কার হাসির শব্দ। স্বপ্নেই সে বেরিয়ে গেল। দেখল স্টার্শিনা। একটু এগিয়ে দেখল লােকটি স্টার্শিনা নয়, সেই মহাজন। এই লােকটিই তাকে এখানে আসতে বলেছিল। কিছু জিজ্ঞাসা করতেই লােকটি যেন বদলে গেল। এখন সে ভলগার ভাটি থেকে আসা সেই চাষি। সব শেষে পাখােম দেখল, এ হচ্ছে একটি শয়তান; মাথায় শিং, পায়ে খুর। বিকট শব্দ করে সে হাসছে। অদূরে একটি লােক পড়ে আছে। তার মুখ কাগজের মতাে সাদা। লােকটির দিকে তাকিয়ে পাখােম দেখল, লােকটি সে নিজে। তার দম যেন আটকে এল। সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে গেল ঘুম। চারদিকে ফর্সা হয়ে গেছে। এখনই সূর্য উঠবে। তাকে জমি দখলের দৌড় শুরু করতে হবে।
পাখখামের প্রয়ােজনীয় জমি শিকান নামে একটি গােল পাহাড়। এই পাহাড়ের উপর স্টার্শিনা তার টুপি রাখল। টুপির মধ্যে পাখখামের ১০০ রুবল। এখান থেকেই তার যাত্রা শুরু। পাখােম দেখ সবই উর্বর জমি, সােনার টুকরাে। অনেক চিন্তা করে সে সূর্য-উদয়ের দিকে যাত্রা করল। আতেও নয়, খুব জোরেও নয়। ১১৬৬ গজ যাবার পর সে একটু থামল। একটি খুঁটি পুতল। এখন সে লম্বা লম্বা পা ফেলে চলতে লাগল। থেমে আর একটি খুঁটি পুতে দিল। সূর্যের দিকে তাকাল একবার। গােল পাহাড়টার উপর আলাে পড়েছে। পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলাের উপরও আলাে পড়েছে। হিসাব করে দেখল, প্রায় সাড়ে তিন মাইল পথ হাঁটা হয়েছে। আরও সাড়ে তিন মাইল হেঁটে সে বাঁ-দিকে মােড় নেবে। শরীর তার গরম হয়ে উঠেছে। কোট খুলে ফেলল, জুতাও। হাঁটতে তার খুব ভালাে লাগছিল। তাই ভালাে ভালাে জমি দেখে বাক মােড় নিতে লাগল।
গােল পাহাড়টা এখন আর দেখা যায় না। পাখােম ভাবল : মােড়টা বেশ বড় হয়েছে নিশ্চয়। তার শরীর থেকে ঘাম ঝরছে। সে ক্লান্ত বােধ করছে। সে খানিকটা পানি খেল। একটি খুঁটিও পােতা হলাে। পথে বড় বড় ঘাস। ভ্যাপসা গরম। তার ভিতর দিয়ে সে ছুটতে লাগল। ঠিক দুপুরে সে সামান্য রুটি খেল। দাঁড়িয়ে সামান্য জিরিয়ে নিল। মাটিতে সে বসল না। কারণ বসলে শুতে ইচ্ছে হবে, আর শুলে ঘুমিয়ে পড়তে পারে। রুটি খাওয়ার পর হাঁটতে সুবিধা হলাে। কিন্তু সামান্য পরেই তার শরীর ভেঙে পড়তে চাইছে। কিন্তু শরীরকে আসকারা দিলে চলে না। কেননা সামান্য কষ্টেই তার অনেক লাভ। সাড়ে ছয় মাইল পথ সে পেরিয়েছে। তার পরও কিছু উর্বর জমি ছেড়ে আসতে পারেনি। কী করে ছাড়ে। চমৎকার তিসি হবে এ জমিগুলােতে।
গােল পাহাড় থেকে ১০ মাইল পথ দূরে এসেছে সে। আর পশ্চিম আকাশে সূর্য অনেকটা হেলে গিয়েছে। প্রাথচ সে ফিরতে পেরেছে ১ মাইলের চেয়ে সামান্য বেশি। এখন সে আর কোনাে বাক নিচ্ছে না। সােজাসুজি হেঁটেও সে যেন এগােতে পারছে না। জুতা সে খুলে ফেলেছিল অনেক আগেই। এখন খালি পা কেটে ছিড়ে গিয়েছে। হাঁটতে তার খুবই কষ্ট হচ্ছে। শরীর কাঁপছে, পা কাঁপছে। একটু বিশ্রামের বদলে সে সব কিছু দিয়ে দিতে পারে। কিন্তু বিশ্রাম করলে চলবে না। তাই কে যেন চাবুক মেরে মেরে তাকে হটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কত পথ বাকি। অথচ সে মৃত প্রায়। এত পথ সে পেরিয়ে এসেছে। কী করে তা ফিরে যাবে।
কিন্তু ফিরতে তাকে হবেই। সব অর্থ, সব পরিশ্রম বৃথা যেতে পারে না। পা ফেটে রক্ত ঝরছে। তবু সে দৌড়াচ্ছে, দৌড়াচ্ছে। তবু যেন এগােতে পারছে না। কোট, জুতা, ফ্লাক, টুপি সব ছুড়ে ফেলে দিল। তবু দৌড়াতে তার দারুণ কষ্ট হচ্ছে। বুকের ভিতর কে যেন হাপর টানছে। হৃৎপিন্ডের ভিতরে মারছে হাতুড়ি। পা দুটি দেরে ভার সইছে না, ভেঙে পড়ছে। জমির কথা সে ভুলে গেল। নিজেকে বাঁচাননাই এখন একমাত্র চিন্তা। সূর্য এখন অস্ত যাওয়ার পথে। গোল পাহাড়ের লােকগুলাে তাকে ডাকছে। চিৎকার করে তাকে উৎসাহ দিচ্ছে। সে শেয়ালের চামড়ার টুপিটি মাটিতে পড়ে থাকতে দেখল। তার ভিতরে টাকা। তার পাশে দাঁড়িয়ে স্টার্লিনা। তার স্বপ্নের কথা মনে হলাে।
তবু সে পৌছাতে চায়। নিজেকে সে খুন করেছে। তবু দৌড় বন্ধ করল না। সূর্য যখন অস্ত গেল, তখন সে পাহাড় ছুঁয়েছে। একটি মুমূর্ষ জন্তুর মতাে সে পাহাড় ডিঙিয়ে টুপিটি স্পর্শ করল। সর্শ করতে করতে সে নিচে পড়ে গেল। স্টার্শিনা চিৎকার করে উঠল, 'হায় যুবক, অনেক জমি তুমি পেলে বটে।' পাখােমের মজুর ছুটে গেল তার কাছে। তাকে টেনে তুলতে চেষ্টা করল। তখন তার মুখ দিয়ে রক্তের ধারা বইছে। পাখােম মারা গেল। স্টার্শিনা হাসতে লাগল। শেষে সাড়ে তিন হাত জমির মধ্যে পাখােমের সমাধি হলাে।
সার-সংক্ষেপ - অতি লােভের বশবর্তী হলে একজন মানুষের জীবনের কী ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই ‘সাড়ে তিন হাত জমি’গল্পটি। গল্পকার পাথােম নামের অতি লােভী একটি চরিত্রের জীবনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে এই সত্যটি নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। গল্পে দেখা যায় রাশিয়ার এক গ্রামে পাহােম নামে এক কৃষক বাস করতেন। তার নিজের তেমন কোনাে জমি জমা ছিল না। কিন্তু জমির প্রতি তার অনেক লােভ। মনে মনে তিনি এমন ইচ্ছা পােষণ করতেন যে তিনি যদি কোনােভাবে অনেক জমি পান তাহলে তিনি কাউকে পরােয়া করবেন না। তার মনের এই কথা শয়তান শুনে ফেলে এবং তাকে একটি উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী শয়তানের প্ররােচনায় তিনি ৩০ একর জমি ও একটি বাগান ক্রয় করেন। এই জমিতে চাষাবাদ করে তিনি অনেক ফসল পাল। এতে তার হাতে কিছু টাকা জমে। শয়তান আবার মানুষের রূপ ধরে তার কাছে এসে তাকে জানায় যে ভলগা নদীর ওপারে জমি খুবই সস্তা এবং উর্বর। আরও মজার ব্যাপার হলাে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হলেই ১০০ একর জমি পাওয়া যায়। জমি পাওয়ার এই লােভ পাােেম সামলাতে না পেরে ঐ গ্রামে চলে যান এবং সেখানে বসবাস শুরু করেন। এরপর শয়তান তাকে আরও প্রলােভন দেখায় এবং বলে পাশের দেশের জমি আরও উর্বর আরও সস্তা। পাখােম আবার বাসস্থান পরিবর্তন করে পাশের দেশে চলে যান। জমি কিনতে গিয়ে জানতে পারেন যে দিনপ্রতি জমির মূল্য মাত্র ১০০ রুবল। দিনপ্রতি বলতে একদিনে সে যতটুকু জমি হাটতে পারবে ততটুকু তার হয়ে যাবে। জমির লােভে একদিন সূর্যোদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তিনি প্রাণপাত করে হাটলেন। একটুও বিশ্রাম নিলেন না। এতে তিনি পরিমাণে অনেক বেশি জমি পেলেন কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছার পর তার শরীর অবসন্ন হয়ে এল এবং কিছুক্ষণ পর তিনি মারা গেলেন। অবশেষে সাড়ে তিন হাত জমিই তার শেষ ঠিকানা হলাে। ‘লােভে পাপ পাপে মৃত্যু এই সত্যটি গল্পটির মধ্যদিয়ে অতি চমৎকারভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে।
সৃজনশীল প্রশ্ন। ১. সজিব সাহেব অফিস থেকে যে বেতন পান তা দিয়ে তার সংসার ভালােই চলছিল। তারপরেও আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি অসৎ পথে পা বাড়ান। বিবেক বিসর্জন দিয়ে জড়িয়ে পড়েন অনৈতিক কাজে। একটার পর একটা কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণ হতে থাকে তার। একদিন অবৈধ অর্থের লেনদেনের সময় হাতে নাতে ধরা পড়েন তিনি। আদালতের রায়ে সমস্তু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয় তার। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি সজিব সাহেবের অবস্থান এখন কারাগারের একটি ছােট্ট ঘরে।
ক. দিন প্রতি’ বলতে কোন সময়কে বােঝায়?
খ. বুকের ভিতর কে যেন হাপর টানছে'- কথাটি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের সজীব সাহেবের সাথে সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাােেম চরিত্রের যে দিক থেকে সাদৃশ্য রয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ, সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকের মূলভাবকে সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের মূলভাবের সমার্থক বলা যায় কি? উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও।
২. এক চাষির একটি রাজহাঁস ছিল। হাঁসটি প্রতিদিন একটি করে সােনার ডিম পাড়ত। ফলে অল্প দিনেই
চাষির ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে গেল। কুঁড়েঘরের পরিবর্তে এখন সে বড় বড় টিনের ঘর-বাড়ির মালিক হয়ে গেল। চাষির আরও বড়লােক হওয়ার ইচ্ছা হলাে। রাতারাতি বড়লোক হওয়ার জন্য একদিন সে রাজ হাঁসটিকে জবাই করল। কিন্তু হায়! একি! হাঁসের পেটে কোনাে ডিম নেই। চাষি মাথায় হাত দিয়ে চিৎকার করে কান্নাকাটি করতে লাগল, আমি এ কী করলাম ।
ক, একজন মজুর সঙ্গে নিয়ে পাখােম কোথায় যাত্রা করলাে?
খ, নিজেকে বাঁচানােই এখন একমাত্র চিন্তা- কেন?
গ. উদ্দীপকের সাথে সাড়ে তিন হাত জমি’ রচনার যে দিকের সাদৃশ্য রয়েছে - ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের চাষির সিদ্ধান্তের সাথে পাখােমের সিদ্ধান্তের মিল রয়েছে- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
0 Comments